ই-ট্রেড লাইসেন্স(E-Trade License) দেশে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজন হয় । বর্তমানে বাংলাদেশে অনলাইনে ই-ট্রেড লাইসেন্স(E-Trade License) করা অনেক সহজ । কিভাবে ই-ট্রেড লাইসেন্স করে, কত খরচ লাগে এবং কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তা এই পোস্টে বিস্তরিত আলোচনা করা হয়েছে।
ই-ট্রেড লাইসেন্স কী?
ই-ট্রেড লাইসেন্স হলো একটি ডিজিটাল ট্রেড লাইসেন্স, যা আপনি অনলাইনের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারেন। এটি ব্যবসা পরিচালনার জন্য সরকারের কাছ থেকে নেওয়া একটি বৈধ অনুমোদনপত্র। আগে যেখানে অফিসে গিয়ে আবেদন করতে হতো, এখন সেটি খুব সহজেই অনলাইনেই করা সম্ভব।
এই লাইসেন্স কেন দরকার?
একটি ব্যবসা পরিচালনার জন্য ই-ট্রেড লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। এর কিছু প্রধান কারণ নিচে দেওয়া হলো:
✅ আপনার ব্যবসাকে আইনি বৈধতা প্রদান করে
✅ ব্যাংকে ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্ট খুলতে লাগে
✅ টেন্ডার, রেজিস্ট্রেশন ও কর কার্যক্রমে প্রয়োজন
✅ আমদানি-রপ্তানি লাইসেন্স পেতে সহায়ক
✅ লাইসেন্স না থাকলে ব্যবসা বেআইনি বিবেচিত হয়
এই লাইসেন্সের সুবিধাগুলো
ই-ট্রেড লাইসেন্সে আপনি পাবেন নিচের সুবিধাগুলো:
✔️ অনলাইনেই আবেদন ও ফি পরিশোধের সুবিধা
✔️ লাইসেন্সের তথ্য ডিজিটালি সংরক্ষিত থাকে
✔️ সময় ও কাগজপত্রের ঝামেলা কমে
✔️ দুর্নীতির ঝুঁকি কম
✔️ ঘরে বসেই লাইসেন্স ডাউনলোড করা যায়
কোথা থেকে ই-ট্রেড লাইসেন্স করা যাবে?
আপনি ই-ট্রেড লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন সরাসরি সরকারী ওয়েবসাইটে: https://www.etradelicense.gov.bd/
এই সাইটে রেজিস্ট্রেশন করে ফর্ম পূরণ, প্রমাণপত্র আপলোড এবং পেমেন্ট করে আপনি ঘরে বসেই আপনার ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে পারবেন।
এই লাইসেন্সের জন্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয়?
ই-ট্রেড লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে নিচের কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে হবে।
১। জাতীয় পরিচয়পত্র( NID) বা পাসপোর্টের কপি
২। আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজ ছবি
৩। ভাড়াটে হলে বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র, মালিক হলে জমির কাগজ
৪। হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ( যদি প্রযোজ্য হয়)
৫। drum সার্টিফিকেট
কোম্পানি হলে –
১। মেমোরেন্ডাম, আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশন ও ইনকর্পোরেশন সার্টিফিকেট
২। ফায়ার সার্ভিস সনদ( শিল্প বা বড় ব্যবসার ক্ষেত্রে)
৩। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনাপত্তি সনদ( NOC)
৪। ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট( যদি প্রয়োজন হয়)
ই-ট্রেড লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে?
ই-ট্রেড লাইসেন্সের খরচ আপনার ব্যবসার ধরণ ও অবস্থানের ওপর নির্ভর করে । নিচে সাধারণ খরচগুলো দেওয়া হলোঃ
১। আবেদন ফি মাত্র ১০ টাকা
২। লাইসেন্স ফি BDT 100 থেকে BDT 40,000 পর্যন্ত হতে পারে
৩। অতিরিক্ত চার্জ সরকারি ফি- র ওপর ১৫ Handbasket প্রযোজ্য
উল্লেখ্য কর্পোরেট বা বড় ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্স ফি তুলনামূলকভাবে বেশি হয় ।
অনলাইনে ই-ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম
ই-ট্রেড লাইসেন্স করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।
১। ই-ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য প্রথমে ওয়েবসাইটে ঢুকে “ New Registration ” বাটনে ক্লিক করুন।
২। বিস্তারিত তথ্য দিয়ে প্রোফাইল তৈরি করে ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি ও স্বাক্ষর আপলোড করুন।
৩। আপনার ব্যবসার ধরন অনুযায়ী আবেদন ফর্ম সঠিকভাবে পূরণ করুন।
৪। অনলাইন বিকাশ/রকেট/কার্ড এর মাধ্যমে পেমেন্ট করে ফি পরিশোধ করুন।
আবেদন সফল হলে SMS বা ইমেইলে লাইসেন্স ডাউনলোডের নির্দেশনা পাবেন
কত দিনে ই- ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া যায়?
১। নতুন আবেদন ৩ কর্মদিবসের মধ্যে
২। লাইসেন্স নবায়ন ২ কর্মদিবস
ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম
আপনার ব্যবসার জন্য আপনি যদি পূর্বে লাইসেন্স করে থাকেন, তবে erevenue.dncc.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে পুনরায় লাইসেন্স নবায়ন করতে পারবেন ।
১। লগইন করে পূর্বের ট্রেড লাইসেন্স তথ্য দিন
২। নির্ধারিত ফি অনলাইনে পরিশোধ করুন
নবায়ন শেষ হলে আপনি পুনরায় নতুন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন ।
ℹ️ অতিরিক্ত তথ্য
লাইসেন্সের মেয়াদ ১ বছর
প্রাপ্তির মাধ্যমঃ ডাকযোগ, কুরিয়ার বা অনলাইন থেকে প্রিন্ট করে সংগ্রহ করতে হবে।
🔍 উপসংহার
বাংলাদেশে ব্যবসা করার জন্য একটি বৈধ ই-ট্রেড লাইসেন্স গুরুত্বপূর্ণ । আপনি যদি অনলাইন বা অফলাইন যেকোনো ধরনের ব্যবসা শুরু করতে চান, তাহলে দ্রুত ট্রেড লাইসেন্স করে নিন । অনলাইন আবেদন পদ্ধতি খুবই সহজ ও স্বচ্ছ ।
আপনার ব্যবসার ধরন অনুযায়ী নির্দিষ্ট কাগজপত্র বা খরচ জানার জন্য কমেন্ট বা ইনবক্স করতে পারেন ।
দ্রুত ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন…